ঘড়ির কাঁটা ৫টা ছুঁলেই টিভির সামনে বসে পড়েন বাড়ির মা, কাকিমা থেকে শুরু করে বয়োজ্যেষ্ঠ মানুষেরা। কারণ তখনই তো শুরু হয় ‘দিদি নম্বর ১’ (Didi no. 1)। বাংলার নম্বর ওয়ান দিদি রচনা বন্দ্যোপাধ্যায় (Rachna Banerjee) চলে আসেন এই রাজ্যেরই বহু নামী-অনামী দিদিদের জীবনসংগ্রামের কাহিনী নিয়ে। তবে যে দিদি প্রত্যেকের জীবনসংগ্রামের গল্প দর্শকদের রোজ বলেন, তাঁর জীবন সংগ্রামের গল্পটা কি জানেন? কত কষ্ট করে রচনা আজ এই সাফল্য অর্জন করেছেন, তা আজ এই প্রতিবেদনে তুলে ধরা হল।
১৯৭৪ সালের ২ অক্টোবর জন্ম হয়েছিল রচনার। তখন নাম ছিল ঝুমঝুম বন্দ্যোপাধ্যায়। প্রথম ছবি ‘দান প্রতিদান’এ তাঁর অভিনীত চরিত্রের নাম ছিল ‘রচনা’। তখন থেকেই বদলে যায় অভিনেত্রীর নাম। আর এখন তো তাঁকে একডাকে এই নামেই চেনেন সকলে।
নব্বইয়ের দশকের এই জনপ্রিয় অভিনেত্রী বাংলার পাশাপাশি ওড়িয়া এবং দক্ষিণী সিনেমাতেও কাজ করেছেন। অমিতাভ বচ্চন থেকে শুরু করে চিরঞ্জীব- বহু নামী তারকার সঙ্গে স্ক্রিন শেয়ার করেছেন তিনি। তবে বাংলা সিনেমার ক্ষেত্রে রচনার জুটি সবচেয়ে হিট ছিল প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে। একসঙ্গে তাঁরা প্রায় ৩৫টি ছবিতে কাজ করেছেন। তাঁদের জুটির জনপ্রিয়তা ছিল বিপুল। তবে বাংলা সিনেমার এই নামী অভিনেত্রী কীভাবে হয়ে উঠলেন, টেলিভিশনের সবচেয়ে জনপ্রিয় মুখ? কীভাবে রচনা হয়ে উঠলেন ‘দিদি নম্বর ১’?
২০১০ সালে রচনা জি বাংলার ‘ডান্স বাংলা ডান্স’ শোয়ের বিচারক ছিলেন। তখনই তাঁকে চ্যানেলের পক্ষ থেকে এই শোয়ের প্রস্তাব দেওয়া হয়। অভিনেত্রী সেই প্রস্তাব গ্রহণ করে নেন। আর বাকিটা তো ইতিহাস। মাঝে দেবশ্রী রায় এবং শ্রাবন্তী চট্টোপাধ্যায়কে দিয়েও এই শোয়ের সঞ্চালনা করানো হয়েছিল। তবে দর্শকরা তা একেবারেই মেনে নিতে পারেননি। ক্রমেই তলানিতে ঠেকছিল শোয়ের টিআরপি। শেষে ফের ফিরিয়ে আনা হয় প্রত্যেকের প্রিয় দিদি রচনাকে।
বাংলার ‘দিদি নম্বর ওয়ান’ রচনা ব্যক্তিগত জীবনের অনেক ওঠাপড়ার সম্মুখীন হয়েছিলেন। ২০০৪ সালে ওড়িয়া অভিনেতা সিদ্ধার্থ মহাপাত্রের সঙ্গে গাঁটছড়া বেঁধেছিলেন নায়িকা। কিন্তু পরের বছরই সেই বিয়ে ভেঙে যায়। এরপর ২০০৬ সালে প্রবল বসুকে বিয়ে করেন। তাঁদের একটি পুত্র রয়েছে প্রনীল বসু। তবে শোনা যায়, অভিনেত্রীর সঙ্গে তাঁর দ্বিতীয় স্বামীর সম্পর্কও বিশেষ ভালো নেই এখন।
কয়েকমাস আগে রচনার পিতারও মৃত্যু হয়েছে। বাবা অন্ত প্রাণ নায়িকা একেবারেই ভেঙে পড়েছিলেন সেই সময়। বিরতি নিয়েছিলেন ‘দিদি নম্বর ১’ থেকেও। তবে আবার সব ঝড় সামলে ফিরে এসেছেন রচনা। রোজ বিকেল ৫টায় হাজির হয়ে যান দর্শকদের ড্রয়িংরুমে।