রান্না তাঁর ভালোবাসা। রান্না পেলে আর কিছু চাই না। স্বাভাবিকভাবেই রান্নাঘরের সকল খুঁটিনাটি ছিল তাঁর নখদর্পণে। সেই বিষয়ে ছিল তাঁর অগাধ জ্ঞান। তবে সেই জ্ঞান আর কারোর সঙ্গে ভাগ করে নিতে পারবেন না। অকালেই চিরবিদায় নিলেন ‘কিচেন ক্যুইন’ (Kitchen Queen) শুক্লা মুখোপাধ্যায় (Shukla Mukherjee death)।
রান্নার প্রতি অগাধ ভালোবাসা থেকেই সেই বিষয়ে প্রচুর জ্ঞান আহরণ করেছিলেন শুক্লাদেবী। আর সেই জ্ঞানের সৌজন্যেই অনুরাগীদের থেকে আদায় করেছিলেন ‘কিচেন ক্যুইন’ তথা ‘রান্নাঘরের সম্রাজ্ঞী’ তকমা। সেই ব্যক্তিত্বই আর নেই। গতকাল, অর্থাৎ বুধবার শহরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেছেন শুক্লাদেবী।
দীর্ঘদিন ধরেই অসুস্থ ছিলেন সকলের প্রিয় ‘কিচেন ক্যুইন’। এর আগেও বেশ কয়েকবার হাসপাতালে ভর্তি হতে হয়েছিল তাঁকে। প্রত্যেকবারই সুস্থ হয়ে ফিরে এসেছেন। কিন্তু এবার জীবন যুদ্ধে হার মানলেন শুক্লাদেবী। গতকাল রাতেই মৃত্যু হয়েছে তাঁর।
শুক্লাদেবীর বিশেষত্ব ছিল, তিনি যে কোনও ধরণের সবজি দিয়ে বিভিন্ন সুস্বাদু রান্না করতে পারতেন। আলুর খোসা থেকে শুরু করে পটলের খোসা- সবজির পাশাপাশি, বিভিন্ন সবজির খোসা দিয়েও নানান চমকপ্রদ রেসিপি বানাতেন তিনি।
‘কিচেন ক্যুইন’এর মৃত্যুর পর স্বাভাবিকভাবেই শোকের ছায়া নেমে এসেছে তাঁর এবং ‘রান্নাঘর’এর অনুরাগীদের মনে। পাশাপাশি মন খারাপ টলিউডেরও। শুক্লাদেবীর মৃত্যুর পর একটি নামী সংবাদমাধ্যমের তরফ থেকে তাঁর আত্মীয় এবং ‘রান্নাঘর’এর যোগ্য উত্তরসূরি সুদীপা চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছিল। তিনি বলেন, ‘চলতি মাসের ৮ তারিখ ওঁর জন্মদিন ছিল। আমি এতটাই ব্যস্ত ছিলাম যে শুভেচ্ছাটুকু জানাতেও ভুলে গিয়েছিলাম। আজ সেটাই সবথেকে বেশি কষ্ট দিচ্ছে’।
কান্নাভেজা গলায় সুদীপার সংযোজন, ‘‘রান্নাঘর’এর জন্ম থেকে ও সঙ্গে ছিল। তখন এত টাকা ছিল না। তাই নিজেই তিন-চারটে মোচা কিনে এনে নিজের মাথা খাটিয়ে তিন-চার রকমের পদ রান্না করতেন’। এভাবেই নিজের সবটুকু দিয়ে, ভালোবেসে, যত্নে ‘রান্নাঘর’কে দাঁড় করিয়েছিলেন। আর এবার সেই শুক্লাদেবীই সকলকে কাঁদিয়ে চিরবিদায় নিলেন।