আজ হঠাৎ সোমবার সপ্তাহের শুরুর দিনেই মন খারাপ হয়ে গিয়েছে বাংলার গোটা বিনোদন জগতের। প্রয়াত হয়েছেন বাংলা বিনোদন জগতের অন্যতম জনপ্রিয় পরিচালক তরুণ মজুমদার (Tarun Majumdar)। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৯১ বছর। তাঁর স্ত্রী তথা বর্ষিয়ান অভিনেত্রী সন্ধ্যা রায়ও (Sandhya Roy)স্বামীর মৃত্যুর পর কান্নায় ভেঙে পড়েছেন। মাঝেমধ্যে ডুকরে কেঁদে উঠছেন। প্রসঙ্গত আমাদের বাংলা বিনোদন জগতে অনেক অভিনেতা অভিনেত্রীকে তৈরি করার মূল কান্ডারী হলেন এই দুই তারকা দম্পতি।
তাঁদের হাত ধরেই তৈরি হয়েছেন বাংলার দেবশ্রী রায় ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত তাপস পাল বিপ্লব চট্টোপাধ্যায় এর মত এমনই নামকরা নানান অভিনেতা অভিনেত্রী। আর আজ প্রিয় তনুদাকে হারিয়ে তারা সকলেই যেন বাকরুদ্ধ। বাংলা সিনেমা জগতে মহুয়া,দেবশ্রী আর মৌসুমী এই তিনজনকে নিজের মেয়ের চোখে দেখতেন তরুণ মজুমদার। স্ত্রী সন্ধ্যা রায়ও ওদেরকে মেয়ে বলেই মনে মেনে নিয়েছিলেন।
১) দেবশ্রী রায় (Deboshree Roy)
আজ তরুন মজুমদারের প্রাণের দিনে পুরনো স্মৃতিচারণা করে দেবশ্রী রায় বলেছেন,আমার সিনেমা দুনিয়ার ‘মা-বাবা’ সন্ধ্যা রায়, তরুণ মজুমদার। দেবশ্রীর করিয়ে তিনি তখন এক তাল মাটির ঢেলা। ওঁরা দু’জনেই সেই মাটি থেকে মূর্তি বানিয়েছেন। তাতে প্রাণ ঢেলেছেন।ছোট পর্দার সর্বজয়ার ‘কথায় ‘চুমকি’ থেকে ‘দেবশ্রী’ হয়ে নতুন জন্ম হয়েছে আমার’। দেবশ্রী জানিয়েছেন তিনি তরুণ মজুমদারের পরলৌকিক কাজ করবেন। পুরনো স্মৃতি হাতড়ে দেবশ্রী বলেছেন ‘তনুদা সব সময় বলতেন,মা রে, আমার তো কোনও সন্তান নেই। যখন থাকব না তখন শেষ কাজ করবি। বাবার কথা ফেলি কী করে?’
২) মৌসুমমী চট্টোপাধ্যায় (Maushumi Chatterjee)
শোকবার্তা জানিয়েছেন মৌসুমমী চট্টোপাধ্যায়ও। ১৯৬৭ সালে তরুণ মজুমদারের হাত ধরেই বাংলা সিনেমায় হাতেখড়ি হয়েছিল মৌসুমী চট্টোপাধ্যায়ের। তরুণ মজুমদারকে নিজের বাবার মতন দেখেন মৌসুমী। অভিনেত্রীর কথায় ‘জীবনে আর এক বাবাকে হারালাম। ওঁর তৎ ধরেই ক্যামেরার সামনে আমার পরিচয়।’ প্রথম সিনেমা করার সময় মৌসুমী খুবই ছোট ছিলেন।দুষ্টুমি করার জন্য নাকি কান ধরে দাঁড় করিয়ে দিয়েছিলেন। কষ্ট পেয়েছিলেন সেদিন। আর আজ প্রয়াত শিল্পীর মৃত্যুদিনে সেইসব পুরোনো স্মৃতিগুলোই মনে পড়ছে অভিনেত্রীর।
৩) বিপ্লব চট্টোপাধ্যায় (Biplab Chatterjee )
স্মৃতিচারণা করেছেন অভিনেতা চট্টোপাধ্যায়ও। সেইসাথে আজকের প্রজন্মের প্রতি কিছুটা ক্ষোভ উগরে দিয়েই তিনি বলেছেন তরুণ মজুমদারের ছবি একটু ধীর গতির হলেও তাতে থাকতো নিটোল গল্প থাকত। কিন্তু আজকের প্রজন্ম তাঁর তৈরি ছবি কতটা দেখে তাই নিয়ে যথেষ্ট সন্দেহ রয়েছে বিপ্লব চট্টোপাধ্যায়ের।সেইসাথে অভিনেতার আরো সংযোজন পরিবেশ বদলেছে,প্রজন্ম বদলেছে।তাই এখনকার সময়ের সাথে ওনার মতো পরিচালকের মানিয়ে নিতে কষ্টই হতো।
৪) রঞ্জিত মল্লিক (Ranjit Mallik)
তরুণ মজুমদারের সাথে ২০০৭ সালে ‘চাঁদের বাড়ি’ সিনেমায় প্রথম অভিনয় করেছিলেন রঞ্জিত মল্লিক। সেই স্মৃতি হাতড়ে অভিনেতা জানিয়েছেন ওনার সাথে একটি সীমায় কাজ করতে পেরে তিনি নিজেকে সৌভাগ্যবান বলে মনে করেন। সেইসাথে আনন্দবাজারকে অভিনেতা বলেছেন ‘সেই সময়কার সব মানুষ চলে যাচ্ছেন। ঐ প্রজন্মের পরিচালকদের মধ্যে তরুণবাবুই মনে হয় শেষ, যিনি ছিলেন।’
৫) ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত (Rituparna Sengupta)
ঋতুপর্ণা অভিনীত তরুণ মজুমদার পরিচালিত চাঁদের বাড়ি আজও দাগ কাটে দর্শকদের মনে। মনের মধ্যে ভীড় করে আসা সেই স্মৃতি হাতড়েই এদিন প্রয়াত পরিচালকের স্মরণে অভিনেত্রী বলেছেন ‘আমি অন্তর থেকে দুঃখিত। আজ অনেক দূরে আছি, বিদেশে। তাই ছুটে যেতে পারলাম না। কিন্তু আমার মন ছুটে গিয়েছে তাঁর কাছে। ‘