ভোজপুরি ইন্ডাস্ট্রির ‘সুপারস্টার’ দীনেশ লাল যাদব (Dinesh Lal Yadav) ওরফে নিরহুয়া। সম্প্রতি রাজনীতির ময়দানেও পা রেখেছেন তিনি। লোকসভা উপনির্বাচনে আজমগড় কেন্দ্র থেকে জয়লাভ করেছেন এই গায়ক-অভিনেতা। এখন তাঁর জীবনে খ্যাতি, যশ, অর্থ-সহ কিছুই রয়েছে। তবে নিরহুয়ার (Nirahua) জীবনে শুরু থেকেই কিন্তু এইসবকিছু ছিল না। বরং অনেক কষ্ট করে এই সবকিছু অর্জন করেছেন তিনি। অভাবী সংসার থেকে উঠে আসা দীনেশের জন্য ভোজপুরি ইন্ডাস্ট্রির সুপারস্টার হওয়ার লড়াই একেবারেই সহজ ছিল না।
নিরহুয়ার জন্ম হয়েছিল উত্তরপ্রদেশের গাজিপুরে। তবে তিনি নিজের পড়াশোনা কলকাতা থেকে করেছিলেন। পড়াশোনা শেষ করে নিজের গ্রামে ফিরে টুকটাক কাজ শুরু করেন তিনি। নিরহুয়ার পরিবারের প্রত্যেকেই গানবাজনা এবং লেখালেখির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। তাঁরও সেই দিকে ধীরে ধীরে ঝোঁক বাড়তে থাকে। এরপর গ্রামে গ্রামে গিয়ে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে গান গাওয়া শুরু করেন তিনি। এই সম্পূর্ণ বিষয়টি নিরহুয়ার বাবা সমর্থন করতেন।
তবে ২০০১ সালে বাবার মৃত্যুর সঙ্গেই বদলে যায় নিরহুয়ার জীবন। সংসারের পুরো চাপ তাঁর কাঁধে এসে পড়ার পর সে কী করবে তা নিয়ে খানিক দিশেহারা হয়ে পড়েন। প্রথমে একটি অ্যালবামে গান তিনি। সেটি হিট হয়। আস্তে আস্তে তাঁর পরিচিতি বাড়ে। এরপর ২০০৩ সালে ‘নিরহুয়া সটল রহী’ নামের আরও একটি অ্যালবাম বের করার চেষ্টা করেন তিনি। কিন্তু যে কোম্পানির জন্য গানটি বানিয়েছিলেন, তারা নেবেন না বলে জানিয়ে দেন। সেই পরিস্থিতিতে নিরহুয়া সোজা টি-সিরিজের অফিস চলে যান। সেখানে গিয়ে নিজের অ্যালবাম জমা দিয়ে আসেন তিনি।
এরপর মুম্বই থেকে গ্রামে ফিরে ফের চাষাবাদ এবং ছোট-ছোট অনুষ্ঠানে গান গাওয়ার কাজ শুরু করে দেন। ৩-৪ মাস এভাবে যাওয়ার পর হঠাৎ একদিন ওনার গানের অ্যালবামটি মুক্তি পায়। নিরহুয়া জানতেনও না সেটি মুক্তি পেয়েছে। একদিন অনুষ্ঠান করতে যাওয়ার সময় তাঁকে ঘিরে ধরে একদল মানুষ ‘নিরহুয়া সটল রহী’ বলে চিৎকার করতে থাকেন। তখন সম্পূর্ণ বিষয়টি বুঝতে পারেন তিনি। এরপর সেই অ্যালবামটি সুপারহিট হয়ে যাওয়ার পর আর পিছন ফিরে দেখতে হয়নি নিরহুয়াকে।
গানের মাধ্যমে সকলের মন জয় করার পর নিরহুয়া ভোজপুরি সিনেমার জগতে পা রাখেন। ২০০৬ সালে ‘হামকো অ্যাইয়সা ব্যায়সা না সমঝ’ ছবির মাধ্যমে ডেবিউ হয়েছিল তাঁর। এরপর ‘নিরহুয়া রিক্সাওয়ালা’, ‘রঙ্গিলা বাবু’, ‘গঙ্গা যমুনা সরস্বতী’-সহ একাধিক সুপারহিট ছবিতে কাজ করেছেন নিরহুয়া।