কেকের মৃত্যুতে যেন ভিলেন হয়ে দাঁড়িয়েছেন বাংলার অন্যতম জনপ্রিয় গায়ক রূপঙ্কর বাগচি (Rupankar Bagchi)। সারা বাংলা তথা দেশ এখন তার উপর ক্ষিপ্ত। যদিও এর নেপথ্যে রয়েছে, তার কিছু আলটপকা বক্তব্যই। চর্চার থেকেও বলা চলে তাকে নিয়ে বাংলার বিভিন্ন মহলের বিদ্বজনেরা নেমেছেন সমালোচনায়। কিন্তু কেন, হঠাৎ গায়কের উপর চটল সাধারণ মানুষ তা আজ আর কারোর জানতে বাকি নেই।
তার “হু ইস কেকে? (Who is KK)” এই একটা প্রশ্নের জেরেই উত্তাল হয়ে গিয়েছিল সোশ্যাল মিডিয়া। বাংলা গান ও গায়কদের ‘দুরাবস্থার’ কথা তুলে ধরে কেকের কনসার্টের দিন সোশ্যাল মিডিয়ায় ক্ষোভ উগড়ে দিতে দেখা যায় রূপঙ্করকে৷ সেখানে নানান বেফাঁস মন্তব্য থেকে শুরু করে বহু খারাপ শব্দবন্ধও ব্যবহার করেন রূপঙ্কর।
যখন তিনি এসব কথা বলছেন তখন নজরুল মঞ্চে শো মাতাচ্ছেন জনপ্রিয় বলিউডি গায়ক কৃষ্ণকুমার কুনাথ ওরফে কেকে। তখনই একটা ফেসবুক লাইভে এসে রূপঙ্করের দাবি ছিল, ‘আপনারা মুম্বইকে নিয়ে এত মাতামাতি করে যাচ্ছেন। দক্ষিণ ভারতকে দেখুন, পাঞ্জাবকে দেখে শিখুন, ওড়িশাকে দেখুন। বাঙালি হন। বাঙালি হন প্লিজ!’
এমনকি বাংলার একাধিক শিল্পীর নাম উল্লেখ করে রূপঙ্কর দাবি করেন তারা সকলে কেকের থেকে ভালো গান গায়। আর ঘটনাচক্রে তার কিছুক্ষণের মধ্যেই আসে সেই দুঃসংবাদ। ‘প্রয়াত কেকে’। আর এর পরেই কেকে অনুরাগীদের তীব্র রোষ এবং কটাক্ষের মুখে পড়েন রূপঙ্কর। যাদের নাম নিয়ে রূপঙ্কর কেকের বিরুদ্ধে গর্জিয়েছিলেন তাদের মধ্যে অন্যতম শিল্পী ইমন চক্রবর্তীর দাবি, এক জন শিল্পীর উপার্জন, জনপ্রিয়তা নিয়ে বোধহয় এ ভাবেও কটাক্ষ করা ঠিক নয়।
একজন শিল্পীর আরেকজন শিল্পীর উপর সৌহার্দ্য এবং সম্মান থাকাটা ভীষণ জরুরি। তিনি আরও জানান, ‘কেকে যদি এ ভাবে না-ও চলে যেতেন, তা হলেও আমি রূপঙ্করদার বক্তব্যে এতটাই বিব্রত হতাম।’ রূপঙ্করের বিরোধিতা করেছেন শ্রীলেখা, রূপাঞ্জনার মতো প্রথম সারির শিল্পীরাও। তবে রূপঙ্করের হয়ে সুর চড়াতে শোনা গেল গায়ক নচিকেতা চক্রবর্তীকে।
তাঁর কথায়, কেকে রূপঙ্করের বক্তব্যের জেরে মারা যাননি। রাজার মত মৃত্যু হয়েছে তাঁর, সকলেই এমন মৃত্যু চান। ‘এক জন বাঙালি শিল্পী তার অভিমানের জায়গা থেকে একটা কথা বলল। আর আমরা সেটাকে ধরতেই পারলাম না। অন্য ব্যাখ্যা করছি!’ কিন্তু নচিকেতার এই অন্ধ সমর্থনকে মানতে পারছেন না অভিনেতা ভাস্বর চ্যাটার্জি।
নচিকেতার নাম করেই তার সাফ জবাব, “সরি নচিকেতা দা তোমায় সমর্থন করতে পারলাম না, আমরা সবাই জানি রূপঙ্করের কারণে কেকের মৃত্যু হয়নি, কিন্তু তাই বলে ওর পাশে থাকাটা খুব হাস্যকর মনে হচ্ছে৷ শিল্পী হয়ে আরেক শিল্পীকে অপমান করাটা আপনি মেনে নিচ্ছেন?” তার বক্তব্যকে সমর্থন জানিয়েছেন বহু মানুষ।