রাস্তাঘাটে চলার পথে প্রতিদিনই কতশত মানুষ চোখে পড়ে। ট্রেনে বসে যাতায়াতের সময় অনেক অসহায় মানুষদের দেখা পাওয়া যায়। যাদের অনেকেই ভিক্ষাবৃত্তি (Begging) করে বেঁচে থাকেন। কারোর পা নেই তো কারোর হাত নেই, কেউ আবার অন্ধ তাই রাস্তার ধরে বা স্টেশনের কোনো এক কোন বসে পথচলতি মানুষদের কাছে হাত বাড়িয়ে ভিক্ষা চেয়ে নেয়। আমাদের দয়া হলে মাঝে মধ্যে কিছু দান করি, নাহলে এড়িয়ে চলে যায়। রাস্তার এই মানুষগুলো এভাবেই নিজেদের দিন কাটায়।
মাঝে মধ্যে সোশ্যাল মিডিয়াতে এই সমস্ত গরিব ও দুস্থ ব্যক্তিদের নিয়ে একটু আধটু আলোড়ন সৃষ্টি হয়। তবে তার বেশি কিছুই হয়না। কখনো আধপেটা তো কখনো না খেয়েই দিন কাটাতে বাধ্য হন এই সমস্ত মানুষগুলো। তবে আসল কথা হল প্রতিটা মানুষেরই কিছু না কিছু কাহিনী রয়েছে। তেমনি এই ভিক্ষুকগুলোরও কিছু কাহিনী রয়েছে। এবার এমনি এক ৯০ উর্ধে বৃদ্ধের কথা জানাবো আপনাদের।
বৃধ্য ব্যক্তিকে প্রথমে দেখে ভিখারিই মনে হবে। অবশ্য মনে হওয়াটাও স্বাভাবিক, রাস্তার ধরে নোংরা কাপড়ে এক বৃদ্ধ সে ভিখারি না হয়ে কি বা হতে পারে! কিন্তু এই বৃদ্ধের রয়েছে এক অসাধারণ কাহিনী। এবার সেই কথাই আপনাদের জানাবো। ছবিতে যে বৃদ্ধকে দেখছেন তার বয়স ৯০ এর কোটা পার। বৃদ্ধ ব্যক্তির নাম হল সুরেন্দ্র বশিষ্ঠ (Surendra Basisth)। দেখে মনে না হলেও আসলে কিন্তু তিনি একজন মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার (Mechanical Engineer)। না ঠাট্টা করছি না, কানপুর আইআইটি (Kanpur IIT) থেকে মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং পাশ করেছেন তিনি।
ইঞ্জিনিয়ারিং পাশ করেছেন ১৯৬৯ সালে। এরপর এক বেসরকারি সংস্থায় চাকরিও করেছেন দীর্ঘদিন। কিন্তু মুশকিল হল যে সংস্থায় ওই ব্যক্তি চাকরি করতেন সেটি হটাৎই বন্ধ হয়ে যায়। বিয়ে করেননি সুরেন্দ্র। জমানো অর্থ দিয়ে যেটুকু চালানো যায় চালিয়েছেন। এরপর টাকা পয়সা শেষ হতে বহুদিন ধরে অর্থ কষ্টে ভুগেছেন সুরেন্দ্র। শেষমেশ পেটের দায়ে ভিক্ষাবৃত্তিকেই বেছে নেন। যতই হোক বাঁচার ইচ্ছা যে রয়েছে প্রবল। এখনো দিব্যি গড়গড়িয়ে ইংরেজিতে কথা বলতে পারেন তিনি।
View this post on Instagram
সোশ্যাল মিডিয়াতে বৃদ্ধের একটি ভিডিও বেশ কিছুদিন আগে ভাইরাল হয়ে পড়েছিল। ভিডিওতে গোয়ালিয়রের রাস্তায় পরে থাকতে দেখা গিয়েছিল তাকে। একটি স্বেচ্ছাস্বেবী সংস্থা তাঁকে দেখতে পায় ও তার যত্ন যেবার যথাসাধ্য চেষ্টা করে। জানা যায় ওই স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাটি সুরেন্দ্র বশিষ্ঠের কিছু পোশাক আশাকের ব্যবস্থা করে দেন ও খাবারের ব্যবস্থা করে দেয়। বর্তমানে ওই ব্যক্তি কেমন আছেন তা সঠিক জানা নেই!