দেশে করোনা ভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউ এসেছে। আর এই দ্বিতীয় ঢেউয়ে চারিদিকে হাহাকার পরে গিয়েছে। আগের থেকেও ভয়ংকর রূপ নিয়ে ফিরেছে করোনা। তীব্র শ্বাসকষ্ট নিয়ে মানুষে হাসপাতালে হাসপাতালে ঘুরে বেড়াচ্ছে বেড পাবার আশায়। সাথে রয়েছে অক্সিজেনের হাহাকার। অক্সিজেনের ওভাবেই কত মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে বিগত কয়েক দিনে। তবে সম্প্রতি এক খবর পাওয়া গিয়েছে যা শুনে জীবনযুদ্ধের সত্যিকারের হিরোদের কথাই মনে পড়ে।
সম্প্রতি বছর ৪০ এর এক যুবকের প্রাণ বাঁচাতে নিজের হাসপাতালের বেড ছেড়ে দেন এক ৮৫ বছরের বৃদ্ধ। নারায়ণ দাভলকার নামের ওই বৃদ্ধ একজন রাষ্ট্রীয় স্বয়ং সেবক সংঘের (RSS) সদস্য। বিগত কিছুদিন ধরে শ্বাসকষ্টে ভুগছিলেন তিনি। এরপর নাগপুরের ইন্দিরা গান্ধী হাসপাতালে ভর্তি হন তিনি।
যেদিন তিনি ভর্তি হন সেদিন আরেক মহিলা তার স্বামীর জন্য পাগলের মত হাসপাতালের বেড খুঁজে বেড়াচ্ছিল। কিন্তু কোথাও বেড পাচ্ছিলেন না। এই কথা শুনে নিজের বেড ছেড়ে দেবার সিদ্ধান্ত নেন ৮৫ বছরের নারায়ণবাবু। চিকিৎসকরা মানা করলেও তিনি তাদের কথা শোনেন নি। তিনি বলেন, আমার বয়স ৮৫। অনেকদিন তো বাঁচলাম, এই মুহূর্তে ওই যুবককে বাঁচানোটা বেশি গুরুত্বপূর্ণ। ওনার স্ত্রী ও বাচ্চা রয়েছে। আমার বেডটা ওই যুবককে দিয়ে দিন দয়া করে’।
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তাকে বোঝানোর চেষ্টা করে আপনার শারীরিক অবস্থায় ভালো নয়। তাছাড়া এখন থেকে চলে গেলে আর কোনো হাসপাতালে বেড খালি পাবেন কি না তার কোনো নিশ্চয়তাও নেই। কিন্তু কারোর কোনো কোথায় শুনতে রাজি হননি তিনি। নিজের মেয়েকে ফোন করে তাকে বাড়ি নিয়ে যেতে বলেন নারায়ণবাবু। এরপর ওই যুবককে বেড দিয়ে নিজে বাড়িতে চলে যান তিনি। শেষমেশ বাড়িতেই শ্বাসকষ্ট ও অক্সিজেনের অভাবে মৃত্যু হয় তাঁর।
করোনা পরিস্থিতিতে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন অনেকেই। কেউ টাকা পয়সা দিয়ে সাহায্য করছে তো কেউ খাবার যোগাচ্ছে আবার কেউ অক্সিজেনের সাপ্লাই দিচ্ছে। কিন্তু নিজের জীবনের পরোয়া না করে আরেকজনকে জীবনদানের ঘটনা সত্যিই নজির বিহীন ও বিরল। নারায়ণবাবুর এই মহান কাজের ইচ্ছাকে কুর্নিশ জানিয়ে প্রণাম করেছেন নেটিজেনরা।