‘লেখাপড়া করে যে গাড়ি ঘোড়া চড়ে সে’ এই প্রবাদ বাক্যের সাথে ছোটবেলা থেকেই পরিচিতি রয়েছে আমাদের সকলেরই। কেন বলছি এই কথাটা? কারণ পড়াশোনার গুরুত্ব ঠিক কতটা তা ছোট বেলায় বোঝানোর জন্যই এই প্রবাদটি ব্যবহার হত। যেটা আমরা বড় হয়ে বুঝতে পারি। ছোট থেকেই যদি পড়াশোনায় ভালো না হই তাহলে বাড়ির বকা তো রয়েছেই সাথে সমাজেও খুব একটা ম্যান সন্মান থাকে না। তাছাড়া শিক্ষিত না হলে চাকরি পেতেও সময়সা হয়।
ছাত্র জীবনে প্রথম সবচেয়ে বড় পরীক্ষা বলতে সকলেই মাধ্যমিককে বুঝি। ১৪ কি ১৫ বছর বয়সে নিজের স্কুলের বাইরে এটাই জীবনের সবচাইতে প্রথম বড় পরীক্ষা। কিন্তু যদি বলি এই মাধ্যমিক দেবার বয়সেই কেউ পিএইচডি করে ফেলেছে! কি শুনে বিশ্বাস হচ্ছে না নিশ্চই। অবশ্য বিশ্বাস না হবারই কথা। কারণ মাধ্যমিক তারপর উচ্চমাধ্যমিক তারপর ব্যাচেলার, মাস্টার্স সেরে তবে পিইএইচডি পড়তে হয়। যার জন্য পড়াশোনায় ভালো তো হতেই হয় সাথে অনেকটা সময়ও লাগে।
কিন্তু এই অসম্ভবকেই সম্ভব করে দেখিয়ে গোটা দুনিয়াকে অবাক করে দিয়েছিল ভারতীয় বংশোদ্ভূত এক মার্কিন ছেলে। মিরাকেল ঘটানো এই ছেলেটির নাম তানিস্ক আব্রাহাম (Tanishq Abraham)। তানিস্কের বয়স যখন মাত্র ৭ বছর তখনই কলেজে ভর্তি হয়েছিল সে। তও আবার একটা নয়, একসাথে ৩টে কলেজে ভর্তি হয়েছিল সে। যে কারণে মাত্র ১৪ বছর বয়সেই বিশ্ববিদ্যালয়ের গন্ডি পার করে ফেলে সে। এরপর পিএইচডি করতে শুরু করে।
যেখানে আর পাঁচটা সাধারণ ছেলে মেয়ে মাধ্যমিকের জন্য প্রস্তুতি শুরু করে সেখানে রিসার্চ করতে প্রস্তুতি শুরু করে তানিস্ক। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বায়োকেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করে সে। তারপরেই ডক্টরেট হবার জন্য নিজেকে প্রস্তুত করতে শুরু করে সে। নিজের দুর্দান্ত মেধার সাহায্যে এক যুগান্তকারী আবিষ্কারও করে ফেলেছে তানিস্ক। আগুনে পোড়া কোনো রোগীর শরীর স্পর্শ না করেই হৃদযন্ত্রের নানান গতিবিধি মাপার যন্ত্র বানিয়েছে তানিস্ক। যেটা গোটা বিজ্ঞান মহলে রীতিমত সাড়া ফেলে দিয়েছিল।
শুনলে খুশি তো হবেনই সাথে অবাক হবেন তানিস্কের আদি পরিবার ভারতের কেরালায় থাকতেন। এরপর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে চলে যান তাঁরা। সেখানেই পাকাপাকিভাবে বসবাস শুরু করেন। তানিস্কের বাবা বিজৌ আব্রাহাম একজন তথ্যপ্রযুক্তিবিদ।
তানিস্কের মা তাজি আব্রাহাম সেখানেই পশু চিকিৎসক হিসাবে কাজ করেন। সত্যি বলতে তানিস্কের গোটা পরিবারই দুরন্ত মেধার অধিকারী। তাই এতো ছোট বয়সে এতো কিছু করতে পেরেছে সে।
কিশোর তানিস্ক চায় ক্যান্সার নিয়ে রিসার্চ করতে। মারণরোগ ক্যানসারকে কাবু করে রোগীকে সুস্থ করে তুলতে চায় সে। সাথে ক্যান্সারের প্রতিরোধক ওষুধ তৈরী করতে চাই তানিস্ক। যাতে মানুষের জীবন বাঁচানো যায় এই মারণরোগের হাত থেকে।