বর্তমান সময়ে বিয়ের পরেও নায়িকাদের ছবিতে কাজ করে যাওয়ার বিষয়টি খুবই সাধারণ। শুধু তাই নয়, এখন অনেক নায়িকা গর্ভবতী অবস্থাতেও নিজের কাজ চালিয়ে যান। তবে বলিউডে (Bollywood) এমন অনেক নায়িকা রয়েছেন যারা বিয়ের পর ফিল্মি দুনিয়াকে বিদায় জানিয়েছিলেন। এর মধ্যে অনেকে তো আবার কেরিয়ারের শীর্ষে থাকাকালীনই বিয়ে করে নিজের অভিনয় কেরিয়ারে ইতি টেনেছিলেন।
সোনালি বেন্দ্রে (Sonali Bendre)- ‘বম্বে’ ছবিতে ‘তাম্মা তাম্মা’ গানের মাধ্যমে নজর কেড়েছিলেন এই সুন্দরী অভিনেত্রী। এর পর নিজের কেরিয়ারে বলিউডের তিন খান-সহ একাধিক জনপ্রিয় অভিনেতার সঙ্গে কাজ করেছেন সোনালি। তবে ২০০২ সালে অভিনেতা-পরিচালক গোল্ডি বেহলের সঙ্গে গাঁটছড়া বাঁধার পর ফিল্মি দুনিয়া থেকে খুশি খুশি বিদায় নেন অভিনেত্রী। বিয়ের পর ২০০৩ সালে ‘কল হো না হো’ ছবিতে স্পেশ্যাল অ্যাপিয়ারেন্স এবং তারপর ‘ওয়ান্স আপন আ টাইম ইন মুম্বই দোবারা!’ ছবিতে অভিনয় করেছিলেন।
সায়রা বানু (Saira Bano)- বলিউডের এই ডিভাও বিয়ের পর ফিল্মি দুনিয়াকে বিদায় জানিয়েছিলেন। ১৯৬৬ সালে মাত্র ২২ বছর বয়সে তাঁর ভালোবাসার মানুষ দিলীপ কুমারের সঙ্গে গাঁটছড়া বাঁধার পর রুপোলি পর্দা থেকে দূরে চলে যান সায়রা। দিলীপ সাহেব যেহেতু শ্যুটিংয়ের জন্য বেশিরভাগ সময়টাই ট্রাভেল করতেন, তাই সংসারে আরও বেশি করে তিনি সময় দিতে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন অভিনেত্রী।
ববিতা (Babita)- বিয়ের আগে ১৯টি ছবিতে কাজ করেছিলেন রণধীর কাপুরের ঘরণী। তবে বিয়ের পর কাপুর পরিবারের সদস্যরা একেবারেই চাইতেন না ববিতা ছবিতে কাজ করুক। সেই কারণে ২৩ বছর বয়সে রণধীরকে বিয়ের করার পর সিনেমার ঝাঁ চকচকে দুনিয়াকে বিদায় জানান করিশ্মা কাপুর-করিনা কাপুরের মা।
নীতু কাপুর (Neetu Kapoor)- শিশু শিল্পী হিসেবে নিজের কেরিয়ার শুরু করা নীতু পরবর্তীকালে বহু জনপ্রিয় বলিউড সিনেমায় কাজ করেছেন। এই সুন্দরী অভিনেত্রী মাত্র ১৪ বছর বয়স থেকে ঋষি কাপুরের সঙ্গে সম্পর্কে ছিলেন এবং মাত্র ২১ বছর বয়সে বিয়ে করেছিলেন। বিয়ের পর নীতু ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রি থেকে অবসর গ্রহণ করেছিলেন। তবে এরপর ‘দো দুনি চার’ ছবিতে ঋষি কাপুরের নায়িকা হিসেবে ফের ইন্ডাস্ট্রিতে প্রত্যাবর্তন করেছিলেন তিনি।
মীনাক্ষী শেষাদ্রি (Meenakshi Sheshadri)- আশির দশকের শেষ দিকে বহু সুপারহিট ছবিতে অভিনয় করেছিলেন মীনাক্ষী। কিন্তু এরপর ইনভেস্টমেন্ট ব্যাঙ্কার হরিশ মাইসোরের সঙ্গে গাঁটছড়া বাঁধার পর ফিল্মি কেরিয়ারকে বিদায় জানান তিনি। বলিপাড়ার এই জনপ্রিয় অভিনেত্রী এখন স্বামী এবং শিশুদের সঙ্গে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে থাকেন। সেখানে নৃত্য শিক্ষিকা নিজের নতুন কেরিয়ার শুরু করেছেন মীনাক্ষী।
ভাগ্যশ্রী (Bhagyashree)- সলমন খানের বিপরীতে ‘ম্যায়নে প্যায়ার কিয়া’ ছবির হাত ধরে বলিউডে পা রেখেছিলেন ভাগ্যশ্রী। ‘সুমন’ চরিত্রে অভিনয় করে বিপুল জনপ্রিয়তা পেয়েছিলেন তিনি। তবে মাত্র ১৯ বছর বয়সে অভিনেতা হিমালয় দাসানিকে বিয়ে করার পর ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রি থেকে বিদায় নেন ভাগ্যশ্রী।
মন্দাকিনী (Mandakini)- ‘রাম তেরি গঙ্গা মইলি’ ছবির মাধ্যমে তুমুল জনপ্রিয়তা পেয়েছিলেন এই অ্যাংলো ইন্ডিয়ান অভিনেত্রী। তবে একজন বৌদ্ধ সন্ন্যাসীকে বিয়ে করার পর টিনসেল টাউন থেকে বিদায় নিয়েছিলেন মন্দাকিনী। বিয়ের পর তাঁর কয়েকটি ছবি মুক্তি পেলেও, অভিনেত্রী হিসেবে বিয়ের পরই তিনি অবসর গ্রহণ করে নিয়েছিলেন।
নম্রতা শিরোদকর (Namrata Shirodkar)- ১৯৯৩ সালে ফেমিনা মিস ইন্ডিয়া খেতাব জিতেছিলেন নম্রতা। এরপর ‘এলওসি কার্গিল’, ‘অস্তিত্ব’এর মতো বহু ছবিতে অভিনয় করেছিলেন তিনি। তবে ২০০৫ সালে দক্ষিণের জনপ্রিয় অভিনেতা মহেশ বাবুর সঙ্গে সাত পাক ঘোরার পর নিজের অভিনয় কেরিয়ারকে বিদায় জানান নম্রতা।
গায়ত্রী জোশি (Gayatri Joshi)- শাহরুখ খানের বিপরীতে ‘স্বদেশ’ ছবিতে অভিনয় করেছিলেন গায়ত্রী। বলিউডের অন্যতম জনপ্রিয় নায়িকা হওয়ার গুণ তাঁর মধ্যে ছিল। কিন্তু ২০০৫ সালে ওবেরয় কনস্ট্রাকশনসের ম্যানেজিং ডিরেক্টর বিকাশ ওবেরয়কে বিয়ে করার পর ফিল্মি দুনিয়াকে বিদায় জানান গায়ত্রী।
টুইঙ্কল খান্না (Twinkle Khanna)- তিন খানের সঙ্গে কাজ করার পরেও বলিউডে নিজের ছাপ ফেলতে পারেননি টুইঙ্কল। ২০০১ সালে ‘লাভ কে লিয়ে কুছ ভি করেঙ্গে’ ছবিতে শেষবারের মতো দেখা গিয়েছিল তাঁকে। তবে ২০০১ সালে অক্ষয় কুমারকে বিয়ে করার পর অভিনেত্রী হিসেবে অবসর গ্রহণ করেন তিনি।
আসিন থোট্টুমকাল (Asin Thottumkal)- ‘গজনী’ খ্যাত আসিন মাইক্রোম্যাক্সের সিইও রাহুল শর্মার সঙ্গে ২০১৬ সালে গাঁটছড়া বাঁধেন। তবে বিয়ের আগেই অভিনেত্রী জানিয়ে দিয়েছিলেন, বিয়ের পর কিছুটা সময় কোনও প্রোজেক্টে তিনি হাত দেবেন না। অভিনেত্রী এই মুহূর্তে চুটিয়ে সংসার করছেন।