• Srabanti Chatterjee Viral Video শ্রাবন্তী
  • অনুরাগের ছোঁয়াঅনুরাগের ছোঁয়া
  • নুসরত জাহান নুসরত
  • ফুলকিফুলকি
  • শুভশ্রীশুভশ্রী
  • ইচ্ছে পুতুলইচ্ছে পুতুল
  • নিম ফুলের মধুনিম ফুলের মধু
  • কার কাছে কইকার কাছে কই

হঠাৎ ‘বেঁচে উঠল’ তিন হাজার বছরের পুরনো মমি, জানালো শেষ ইচ্ছা

মিশরীয়রা বরাবরই বিখ্যাত তাদের উপাসনার আদবকায়দা ও রহস্যময় ঐতিহাসিক নিদর্শনের কারণে। মিশরের বায়ু ও সূর্যের দেবতা আমান-এর মন্দির ছিল প্রাচীন শহর থিবসের কারনাকে। আমানের মন্দিরে পুরোহিত হিসেবে বহাল ছিলেন নেসিয়ামান। সম্প্রতি নেসিয়ামানের কথা বলার ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে বিশ্বজুড়ে। করোনার আক্রমণে যখন মারা যাচ্ছেন হাজার হাজার মানুষ, তখন ৩০০০ বছর আগের মৃত মানুষের বেঁচে ওঠার ঘটনায় শুরু হয়েছে তোলপাড়!

মমির কফিনে খোদাই করা বক্তব্য উদ্ধার করে ইতিহাসবিদরা বলছেন, তিন হাজার বছর আগে ওই মন্দিরেই তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। শেষ জীবনে মুখে হওয়া সংক্রমণের কারণে দাঁত, মাড়ি ক্ষয়ে যায় নেসিয়ামানের! এই সংক্রমণ থেকেই সারা শরীরে মারাত্মক আলার্জি ছড়িয়ে পড়ে, ফলত মাত্র ৫০ বছর বয়সে তিনি মারা যান। মমি করে রাখা সেই পুরোহিতই ফের ‘বেঁচে’ উঠলেন বিজ্ঞানের হাত ধরে। মৃত্যুর আগে নেসিয়ামানের শেষ কথা অবশেষে শুনলেন বিজ্ঞানীরা।

   

মৃত্যুর সময়ে পুরোহিতের শেষ ইচ্ছা যে কী ছিল, তা তিনি এত বছর পর পুনরায় ‘জীবিত’ হয়ে শোনালেন বিজ্ঞানীদের। যদিও তাঁর অতি ক্ষীণ ও অস্পষ্ট কন্ঠের আওয়াজ পরিষ্কার বুঝতে পারেননি বিজ্ঞানীরা। তবে তিনি যে কিছু শব্দ উচ্চারণ করেছেন, সে বিষয়ে সন্দেহ নেই বিজ্ঞানীদের। অন্যদিকে বিজ্ঞানীদের বিশ্বাস, খুব শীঘ্রই উন্নত প্রযুক্তির সাহায্যে মৃত্যুকালে তাঁর শেষ ইচ্ছার কথা সম্পূর্ণ বাক্যের মাধ্যমে উদ্ধার করা সম্ভব হবে। যদিও মৃত্যুর তিন হাজার বছর পর কি পূর্ণ হবে নেসিয়ামানের শেষ ইচ্ছা? সে বিষয়ে কৌতূহল অশেষ নেটিজেনদের।

বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, শেষ জীবনে মুখের সংক্রমণ তাঁকে কথা বলার পথে বাধা দিত। খুব কষ্টে উচ্চারণটুকু করতে পারতেন তিনি। তাঁর দেহ মমি করে প্রথমে ওই মন্দিরের ভিতরের একটি ঘরে স্থাপন করা হয়। ১৮২৩ সালে পুরোহিতের মমি উদ্ধার করে ইংল্যান্ডের লিডস সিটি মিউজিয়ামে রাখা হয়। নেসিয়ামানের সময়কালে মিশর কেমন ছিল, সে সম্পর্কে অনেক তথ্য এই মমি থেকে উদ্ধার করেছেন বিজ্ঞানীরা।

গবেষকদের মতে, ব্যবচ্ছেদ এবং এক্স-রের দ্বারা নেসিয়ামানের রোগ সম্পর্কেও তথ্য পাওয়া গেছে। তবে গত বুধবার সায়েন্টিফিক রিপোর্টস নামক জার্নালে প্রকাশিত তথ্যে বিশ্ব জুড়ে তীব্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে। এই জার্নালেই উল্লিখিত হয়েছে মৃত্যুর তিন হাজার বছর পর মমির কথা বলার ঘটনা। যদিও কী ভাবে সম্ভব হল রি অলৌকিক ঘটনা, তাও ব্যাখ্যা করা হয়েছে জার্নালে। জানা গেছে, ৩ডি প্রিন্টারে সৃষ্ট ভোকাল বক্সের মাধ্যমে মমির কথা শুনেছেন বিজ্ঞানীরা।

গবেষকদলের এক বিজ্ঞানী জানিয়েছেন, মানুষের ল্যারিংসে তৈরি হওয়া শব্দ ভোকাল ট্র্যাক প্যাসেজে প্রতিধ্বনিত হয়ে যেভাবে অর্থপূর্ণ শব্দ তৈরি করে, সেই ‘ভয়েস বক্স’-এর ব্যাপারটিকেই পুনরায় নির্মাণ করা হয়েছে। এই কাজে প্রথমে বিজ্ঞানীরা পুরোহিতের ভোকাল ট্র্যাকের আকৃতি ৩ডি-প্রিন্টারে কপি করেন। জানা গেছে, নেসিয়ামানের দেহ এত আধুনিক উপায়ে সংরক্ষিত ছিল যে, এত বছর পরও ভোকাল ট্র্যাকের কোষগুলো অক্ষত অবস্থায় পাওয়া যায়। সিটি স্ক্যানের মাধ্যমে প্রথমেই তা নথিভুক্ত করেন বিজ্ঞানীরা।

জার্নালের তথ্যানুযায়ী, ৩ডি-প্রিন্টারে মমির ভোকাল ট্র্যাকের প্রতিলিপি করে ল্যারিংসে কৃত্রিম ভাবে তাঁর কণ্ঠস্বর তৈরি করা হয়। আর তাতেই ক্ষীণ কণ্ঠে ‘বেড’ বা ‘ব্যাড’ জাতীয় কিছু শব্দ উচ্চারণ করতে শোনা যায় নেসিয়ামানকে। এটাই ছিল মৃত্যুর আগে তাঁর শেষ ‘কথা’ ছিল। এর অর্থ যে কী তা অনুধাবন করছেন বিজ্ঞানীরা। আরও উন্নত প্রযুক্তির মাধ্যমে তাঁর শেষ বাক্য জানারও চেষ্টা চালাচ্ছেন গবেষকরা। শেষ বলা কথাগুলো জানলে পারলে প্রায় ৩০০০ বছর পরও যে তাঁর শেষ ইচ্ছা পূরণ করবেন বিজ্ঞানীরা, সে বিষয়ে সহমত সকলেই।