এই মুহূর্তে বাংলা ইন্ডাস্ট্রির অন্যতম ব্যস্ত অভিনেত্রী হলেন শুভশ্রী গাঙ্গুলী (Subhashree Ganguly)। ইদানিং শুভশ্রী মানেই একগুচ্ছ ছকভাঙা বাংলা সিনেমা। তা সে ‘বিসমিল্লা’ হোক কিংবা ‘ধর্মযুদ্ধ’, অথবা ‘হাবজি গাবজি’ তালিকাটা বেড়েই চলেছে দিনে দিনে। এই যেমন পুজোতেই মুক্তি পেতে চলেছে মুক্তি পেতে চলেছে পরমব্রত চট্টোপাধ্যায় পরিচালিত শুভশ্রীর নতুন ছবি ‘বৌদি ক্যান্টিন’।
চমকের এখানেই শেষ নেই! এরইমধ্যে সম্প্রতি প্রকাশ্যে এসেছে শুভশ্রীর আসন্ন সিনেমা ‘‘ইন্দুবালা ভাতের হোটেল’ (Indubala Bhater Hotel) -এর ফার্স্ট লুক। মাথা ভর্তি সাদা চুল, চোখে চশমা,কোঁকড়ানো চামড়া, পরনে সাদা শাড়ি পরা ৭৫ বছর বয়সী বৃদ্ধার সাজে শুভশ্রীকে দেখে একথায় ছিটকে গিয়েছিলেন সকলে। অভিনেত্রীর এই রূপ দেখে সত্যিই তাঁকে চেনা দায়! ছবি দেখে অবাক হয়েছেন কম বেশি সকলেই।
তাই শুভশ্রীর এই লুকের মেকআপ আর্টিস্ট সোমনাথ কুণ্ডুকে সত্যিই কুর্নিশ জানাতে হয়। প্রকৃত অর্থেই তিনি ম্যাজিশিয়ান মানুষ বটে। সম্প্রতি আনন্দবাজার অনলাইনের সাথে এক সাক্ষাৎকার শুভশ্রী জানিয়েছেন ওই মেক আপ করতে এবং তুলতে তাঁর মোট সাড়ে পাঁচ ঘণ্টা সময় লেগেছে। অভিনেত্রী জানিয়েছেন প্রথমদিন মেক আপ শেষ করে তিনি যখন ফ্লোরে এসেছিলেন তখন নাকি তাঁকে দেখে সবাই থমকে গিয়েছিলেন।
প্রসঙ্গত এখন বেশিরভাগ বাংলা সিনেমার পরিচালকদের প্রথম পছন্দ শুভশ্রী। কিন্তু হঠাৎ কি এমন ম্যাজিক হল যে সব পরিচালকরাই ভাবছেন শুভশ্রী কে নিয়ে। এর কারণ জানাতে গিয়ে শুভশ্রী বলেছেন এককালে দুষ্টু মিষ্টি মশলাদার বাণিজ্যিক ছবির নায়িকার তকমা ছেড়ে নিজেকে প্রমাণ করা তার কাছে মোটেই সহজ ছিল না কিন্তু তার মানে এই নয় সুইজারল্যান্ডের বরফে দাঁড়িয়ে শুটিং করাটাও সহজ। অভিনেত্রীর কথায় দুটোই সমান কঠিন।
তবে শুভশ্রী মনে করেন ‘পরিণীতা’ ছবির পর থেকেই জন্ম হয়েছে এক অন্য শুভশ্রীর। সেই থেকেই নাকি পরিচালকরা বুঝে বুঝতে পেরেছিলেন শুভশ্রীও অভিনয় করতে পারেন। তাই পরিণীতার পর থেকেই ইন্ডাস্ট্রিতে গুরুত্ব বেড়েছে তাঁর। অভিনেত্রীর কথায় যদি না মানুষ গতে বাঁধা চিন্তা ভাবনায় আটকে থাকতো তাহলে এই ব্রেকটা তাঁর আগেই পাওয়া উচিত ছিল। সেদিক দিয়ে দেখতে গেলে পরিচালক তথা শুভশ্রীর স্বামী রাজ চক্রবর্তী তার জীবনে একজন কোচের মতোন কাজ করেছেন।
তবে শুধু পরিণীতার জন্য নয় শুভশ্রী মনে করেন এমন বহু কারণ আছে। যার জন্য তিনি মনে করেন ভাগ্যিস রাজ চক্রবর্তী তার জীবনে এসেছিল।আসলে রাজ চক্রবর্তীর হলেন শুভশ্রীর জীবনের এমন একজন মানুষ যিনি তার ওপর সেই সময় বিশ্বাস করেছেন যখন তিনি নিজেও ভাবতে পারেননি তিনি ওই কাজটা করতে পারবেন। তবে সবটা এতটাও সহজে হয়ে যায়নি। অভিনেত্রীর কথায় তাদের সময় চিত্রনাট্য আগে থেকে পড়ার ব্যাপার ছিল না। তবে পরবর্তীতে ইন্ডাস্ট্রিতে তার একটু নামডাক হওয়ার পর একবার তিনি একজন পরিচালকের কাছে ছবির চিত্রনাট্য চেয়েছিলেন।
উত্তরে সেই পরিচালক নাকি তাকে বলেছিলেন ‘বাবা! এত বড় হয়ে গিয়েছিস যে স্ক্রিপ্ট চাইছিস?’ শুধু তাই নয় একটা সময় এমনও গিয়েছেন যখন আজকের এই প্রথম সারির অভিনেত্রীকে এনটিআর স্টুডিওর বাইরে লাইনে পর্যন্ত দাঁড়িয়ে থাকতে হতো। দারোয়ানের কাছে এন্ট্রি করে তবেই ঢুকতে হতো। শুভশ্রী জানিয়েছেন সেই দিক দিয়ে এখনকার নতুন প্রজন্ম অনেক বেশি সুবিধা পায়। তাদের কারো এই ধরনের অসুবিধা মুখোমুখি হতে হয় না বলেই মনে হয় তাঁর। তবে আজ বাংলার সমস্ত পরিচালকদের সাথে কাজ করে শুভশ্রী আনন্দিত হলেও তার জীবনে থেকে গিয়েছে একটা অপূর্ন স্বপ্ন। তা হল বাংলার কিংবদন্তি পরিচালক ঋতুপর্ণ ঘোষের সাথে কাজ করার স্বপ্ন। তবে সব শেষে শুভশ্রী জানিয়েছেন ‘কিছু স্বপ্ন অপূর্ন থাকাই ভালো’।