সারাবছর ধরে যে চারটে দিনের জন্য অপেক্ষায় থাকে বাঙালি সেই দিন বর্তমানে এসেগেছে। গোটা বাংলার মানুষ মেতে উঠেছে দুর্গাপুজোয়। কোথাও থিম পুজো, কোথাও সাবেকি পুজো তো কটাক্ষও আবার বনেদি স্টাইলে পুজো দেখতে মন্ডপে উপচে পড়ার মত ভিড়। তবে থিম কিংবা সাবেকি পুজোর থেকে বনেদি পুজোর প্রতি বাঙালির টান থাকে আলাদাই। অনেক অভিনেতা অভিনেত্রীদের পৈতৃক বাড়িতেই এমন পুজো হয়। আর অভিনেত্রী অন্বেষা হাজরাদের বাড়িতেও বনেদি পুজো হয়।
দর্শকদের পছন্দের বাংলা সিরিয়ালের মধ্যে অন্যতম একটি হল জি বাংলার ‘এই পথ যদি না শেষ হয়’। সিরিয়ালে উর্মি চরিত্রে দুর্দান্ত অভিনয় করে সকলের মন জিতে নিয়েছেন তিনি। অভিনেত্রীর বাড়ি মেমরিতে, পুজোর কদিন সেখানে কাটান তিনি। মেমরির ধানখেউরে অন্বেষাদের গ্রামের বাড়ি। জানা যায় অভিনেত্রীর পরিবার একসময় জমিদার ছিল।
অর্থাৎ জমিদার বাড়ির বনেদি পুজোতেই মেতে ওঠেন অভিনেত্রী। এক সংবাদ মাধ্যমের কাছে সাক্ষাৎকারে তিনি জানান, প্রায় চারশো বছর পুরোনো বাড়িতে দুর্গাপুজো হয়। আর এই দুর্গাপুজোরও নিজস্ব ঐতিহ্য আছে, ২০০ বছরেরও পুরোনো এইপুজো। অন্বেষার মতে, স্বপ্নাদেশ পেয়েই নাকি শুরু হয়েছিল এই পুজো। তাঁর দাদুর বড় পিসি ৫ বছর বয়সে পুজোর জন্য স্বপ্নাদেশে পেয়েছিলেন। সেই থেকেই পুজো চালু হয়।
সকালে ঘুম থেকে উঠেই বড় পিসি বাড়ির সকলকে জিজ্ঞাসা করেছিলেন দুর্গাপুজোর জন্য কী কি লাগে? শুধু তাই নয় কোথায় পুজো হবে কোথায় প্রতিমা বসানো হবে সবটাই বলেছিলেন তিনি। ছোট্ট মেয়ের মুখে এমন কথা শুনে সকলেই চমকে গিয়েছিলেন। এরপর শুরু হয় পুজো। তবে এই দুর্গাপুজো কিন্তু শাক্যমতে নয় বরং বৈষ্ণব মতে হয়।
বছরের এই চারটে দিন ভাইবোন সকলে একসাথে হয় বেশ মজা হয়। পুজোতে অন্নভোগের বদলে লুচিভোগ রান্না করা হয়। পুজোয় সপ্তমী ও নবমীতে ভোগ রান্না হয় সেখানে মাছ থাকে। তবে মাছ থাকলেও মাংস থাকে না। অষ্টমীতেও নিরামিষ ভোগ রান্না হয়। এরপর নবমীর দিনে বলি প্রথা রয়েছে, তবে ফল বলি হয়।
প্রসঙ্গত, অন্বেষাদের মেমরির বাড়ি একপ্রকার ঐতিহাসিক। ইংরেজদের আমলের তৈরী ম্যাপের মধ্যেও মেমরির বাড়ির বাড়ির উল্লেখ রয়েছে। প্রথমটি প্রায় ২০০ বছর দ্বিতীয়টি ৪৫০ বছর পুরোনো। এমন একটা পুজো কি আর কলকাতায় থেকে মিস করা যায়! তাই পুজো মানেই, দেশের বাড়িতে চলে যান অন্বেষা হাজরা।