এখনকার দিনে শারীরিক সুস্থতার পাশাপাশি অত্যন্ত জরুরী মানসিকভাবে নিজেকে সুস্থ রাখাও। একথা এক বাক্যে স্বীকার করবেন কমবেশি সকলেই। ইদানিং মানসিক অবসাদ কথাটার সাথে কম বেশি পরিচিত আমরা সকলেই।ইঁদুর দৌড়ের ব্যস্ত জীবনে কাজের চাপে হোক কিম্বা ক্ষণস্থায়ী সম্পর্কের ভাঙ্গা গড়ায় মন অবসাদে ডুবছে কমবেশি সকলেরই।
ব্যতিক্রম নন বাংলার সেলিব্রেটিরাও। এমন অনেক তারকাই রয়েছেন যারা জীবনের নানান কঠিন পরিস্থিতির সম্মুখীন হওয়ার কারণে নিয়ে ফেলেছিলেন জীবন শেষ করে দেওয়ার মতো সিদ্ধান্ত। আজ বিশ্ব আত্মহত্যা প্রতিরোধ দিবসে বং ট্রেন্ডের পাতায় থাকছে এমনই কয়েকজন সেলিব্রিটিদের কথা যারা একসময় জীবন শেষ করে দেওয়ার মতো চরম সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন।
১. স্বস্তিকা মুখোপাধ্যায় (Swastika Mukherjee)
সেলিব্রিটিদের এই তালিকায় প্রথমেই রয়েছে স্বস্তিকা মুখোপাধ্যায়ের নাম। একটা সময় অভিনেত্রী জীবনের এমনই এক কঠিন পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে গিয়েছিলেন যখন তিনি নিজের জীবন শেষ করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। সালটা ছিল ২০১৪। সে সময় নাট্যকার পরিচালক সুমন মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে ঝগড়ার জেরে নায়িকা নাকি নিজের হাত কেটে নিয়েছিলেন চরম সিদ্ধান্ত। সেই অবস্থায়অনভিনেত্রীকে একটি হাসপাতালেও ভর্তি করা হয়েছিল।
২. মীর আফসার আলী (Mir Afsar Ali)
তালিকায় রয়েছেন বাংলার সকালম্যান বলে পরিচিত মীর আফসার আলীও। একবার এক সাক্ষাৎকারে নিজের জীবনের এক কঠিন সত্যির কথা জানিয়েছিলেন মীর। মীরের কথায় ২০১৭ আর ২০১৯ এই সময়ের মধ্যে মোট চারবার আত্মহত্যা করার চেষ্টা করেছিলেন তিনি। মীর জানিয়েছিলেন পারফর্ম করার চাপ কখনো কখনো তাকে এতটাই চেপে ধরেছিল যখন হতাশা থেকে কি করবেন কিছু বুঝতে না পেরে গ্রিনরুমে বসে কেঁদেও ছিলেন এই শব্দের জাদুকর।
৩. শ্রীলেখা মিত্র (Srilekha Mitra)
রয়েছেন টলিউড অভিনেত্রী শ্রীলেখা মিত্রও। জানা যায় ২০১৩ সালে যখন তিনি বিবাহ বিচ্ছেদের মধ্য দিয়ে যাচ্ছিলেন তখন তিনি কামাল গাজীর যে অ্যাপার্টমেন্টে গিয়েছিলেন সেখানে গিয়ে তিনি নিজের মধ্যে বেশ কয়েকটি পরিবর্তন লক্ষ্য করেছিলেন। এমনকি সেসময় নিজের জীবন শেষ করে দেওয়ার চেষ্টা করেছিলেন তিনি। এ প্রসঙ্গে সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে অভিনেত্রী বলেছিলেন তিনি বাইরে বেরোনো তো দূরের কথা সোশ্যালাইজেশন পর্যন্ত পছন্দ করতেন না। পরবর্তীতে বন্ধু-বান্ধব এবং চিকিৎসকের সাহায্য নিয়ে স্বাভাবিক জীবনে ফায়ার আসেন তিনি। তাই সেই থেকে অভিনেত্রী মানসিক স্বাস্থ্য সম্পর্কে সচেতনতা বাড়ানোর চেষ্টা করে চলেছেন।
৪. রূপাঞ্জনা মিত্র (Rupanjana Mitra)
সেলিব্রেটিদের এই তালিকায় রয়েছেন অভিনেত্রী রূপাঞ্জনা মিত্র। একবার এক সাক্ষাৎকারে অভিনেত্রী জানিয়েছিলেন ২০০৭ সাল থেকে ২০১০ সাল পর্যন্ত তিনি অবসাদে ডুবে গিয়েছিলেন। অভিনেত্রীর কথায় তার সাথে কথা বলার অনেক লোক ছিল ঠিকই কিন্তু সেটা এমন একটা সময় ছিল যখন তার তার নিজেই নিজেকে ভিড়ের মধ্যে প্রচন্ড একা লাগত। এমনকি জীবনটাই শেষ করে দেওয়ার চিন্তাও করেছিলেন অভিনেত্রী।
৫.ভাস্বর চট্টোপাধ্যায় (Bhaswar Chatterjee)
এই তালিকায় রয়েছেন ছোট পর্দার লোকনাথ বাবা অর্থাৎ অভিনেতা ভাস্বর চট্টোপাধ্যায়। এই অভিনেতার জন্য থেকে তিন বছর আগে অর্থাৎ ২০১৯ সালের সময়টা ছিল খুবই খারাপ। শুটিং থেকে বাড়ি এসে তার এতটাই একা মনে হতো তার যে কারো সঙ্গে কথা পর্যন্ত বলতে ভালো লাগত না তার। একটা সময় নাকি তিনি ১৪ তলা থেকে ঝাঁপ দেয়ার কথাও ভেবেছিলেন কিন্তু শেষ পর্যন্ত নিজেকে তিনি আবার অনেক চেষ্টার মধ্যে দিয়ে ফিরিয়ে এনেছেন জীবনের মূল স্রোতে।
৬.পার্নো মিত্র (Parno Mitra)
তালিকায় রয়েছেন টলিউডের আরেক জনপ্রিয় অভিনেত্রী পার্নো মিত্র। এই অভিনেত্রীও নাকি একাধিকবার নিজেকে শেষ করার কথা ভেবেছিলেন। অভিনেত্রীর কথায় এই বিষয়ে মন খুলে কারো সাথে কথা বলা সহজ নয় ঠিকই কিন্তু মানসিক অবসাদে ভুক্তভোগী মানুষদের উদ্দেশ্যে অভিনেত্রীর একটাই পরামর্শ যারা এ ধরনের সমস্যায় ভুগছেন তাদের এটা থেকে বেরোনোর জন্য কারও না কারও থেকে সাহায্য নেওয়া প্রয়োজন।
৭. শৈবাল ভট্টাচার্য (Saibal Bhattcharya)
অভিনেতা শৈবাল ভট্টাচার্য চলতি বছরের আগস্ট মাসেই পশ্চিমবঙ্গের কসবায় নিজের বাসভবনে জীবন শেষ করে দেওয়ার চেষ্টা করেছিলেন অভিনেতা শৈবাল ভট্টাচার্য। পরবর্তীতে জানা যায় মানসিক ভাবে ব্রেকডাউন এর জেরেই এমন একটা কান্ড ঘটিয়ে বসেছিলেন তিনি। প্রসঙ্গত প্রাণনাশের চেষ্টার আগেই অভিনেতা তার ফেসবুকে একটি লাইভ ভিডিও শেয়ার করেছিলেন। যদিও তা পরবর্তীতে মুছে ফেলা হয়েছিল। ওই ভিডিওতে অভিনেতা তার স্ত্রী এবং শ্বশুরবাড়ির লোকজনদের দায়ী করেছিলেন।